রমজানে প্রয়োজন সুখাদ্যাভ্যাস

রমজানে কি খাব? কি খাব না? প্রথমেই এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। অনেকের প্রশ্ন থাকে ইফতারিতে ছোলা, বেগুনি, পিয়াজু, বড়া, পাকুরা, জিলাপি ইত্যাদি খেতে পারব কিনা? উপরোক্ত খাদ্যবস্তুগুলো আমাদের বাঙালি মুসলিম সামাজিকতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই এ ধরনের খাদ্যবস্তু হৃদরোগীদের জন্য কিছুটা ক্ষতিকর হলেও একেবারে বন্ধ করা সমীচীন হবে না। তবে হৃদরোগীদের তেলে ভাজা খাদ্যবস্তু যতটা সম্ভব কম পরিমাণে গ্রহণ করে শাকসবজি যেমন- তরমুজ, ক্ষিরা, শসা, টমেটো, আপেল, কমলা, নাশপাতি, পেয়ারা, বরই, আমড়া, বেল, লিচু ও কম পরিমাণে আম, কাঁঠাল গ্রহণ করে খাদ্য সুষম রাখতে হবে। রোজার মাসে দই, মিষ্টি, পায়েস, ফিরনি, নুডলস, সেমাই, তেহারি, বিরিয়ানি, ভুনা খিচুরি, কোরমা, রেজালা, রোস্ট, পোলাও ইত্যাদি খাদ্য আমাদের সমাজে খুবই প্রচলিত খাদ্যবস্তু। এ ধরনের খাদ্যবস্তু গ্রহণ না করলে রোগীর মনোকষ্ট বাড়ে যা হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকারক আর এসব খাদ্যবস্তু বেশি পরিমাণে গ্রহণের ফলে হৃদরোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে হৃদরোগ আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তবে এ ধরনের খাদ্যবস্তু একবারে বর্জন করাও যেহেতু সম্ভব নয়, তাই প্রতিদিন উল্লিখিত খাবারের মাঝ থেকে একটি অথবা দুইটি আইটেমের বেশি কোনোক্রমেই গ্রহণ করা যাবে না এবং তা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু কম পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। ইফতারে একদিন ছোলা ও পিয়াজু খেলে অন্য আইটেম যেমন বেগুনি, বড়া, জিলাপি, আকুবার মতো অন্য আইটেম খাওয়া ঠিক হবে না এবং রাতের খাবারে বিরিয়ানি খেলে ওইদিন দই, মিষ্টি, রোস্ট, রেজালা, কোরমা ইত্যাদি খাওয়া যাবে না। মোটকথা আপনার খাদ্য গ্রহণের একটা ভারসাম্য রক্ষা করে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আপনার খাদ্য গ্রহণ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে এবং আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।  গ্রামবাংলায় একটা সাধারণ কথা প্রচলিত আছে যে, আপনি যতটুকু হজম করতে পারবেন ঠিক ততটুকুই খাবেন, তার চেয়ে বেশি নয়। এ কথাটাই বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে বলতে গেলে এমনভাবে বলতে হবে যে, আপনার দৈনিক যতটুকু এনার্জি বা শক্তি বা ক্যালরির প্রয়োজন আপনি যদি ততটুকুই গ্রহণ করেন তবে কি খাদ্যবস্তু
খেলেন তা নিয়ে ততটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো দরকার নেই, কারণ প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করায় খাদ্যের পুরো অংশই আপনার শারীরিক প্রয়োজনে খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাই এসব খাদ্যবস্তুর নির্যাস আপনার শরীরে জমা হয়ে থাকার কোনো অবকাশ নেই এবং এসব খাদ্যবস্তুর নির্যাস জমা হয়ে আপনার শারীরিক ক্ষতিসাধিত হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই মনে রাখতে হবে, কি বস্তু দিয়ে আপনি আহার সম্পন্ন করলেন তা বড় কথা নয়, তার চেয়ে বড় ব্যাপার হলো আপনি কতটুকু পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করলেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে কোনো প্রকার খাদ্য গ্রহণ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য বিপদের কারণ। আর আপনার খাদ্য গ্রহণের মাত্রা পরিমিত হচ্ছে কিনা তা বোঝার সঠিক পন্থা হলো, আপনার শারীরিক ওজন একই পরিমাণ আছে কিনা? ওজন বৃদ্ধি পেলে বুঝতে হবে আপনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করছেন এবং ওজন কমতে থাকলে বুঝতে হবে যে, আপনি আপনার শারীরিক প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করছেন। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার আপনার শারীরিক ওজন পরিমাপ করুন। এ
সময় হৃদরোগীদের যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে।
http://za.gl/I7uW6

Share on Google Plus

About bengalismsnew

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

loading...