ছাত্রলীগ নেতা রনি ষড়যন্ত্রের শিকার!

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
স্বার্থান্বেষী মহলসহ চট্টগ্রাম নগরের গুটিকয়েক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি। চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরবিরোধী আন্দোলন, খেলার মাঠ রক্ষার আন্দোলন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়বিরোধী আন্দোলন, স্কুল মাঠে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণবিরোধী আন্দোলনসহ নানা কর্মকান্ডে রনি যখন চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষের কাছে প্রশংসিত হচ্ছিলেন তখনই তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হন। যে ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে রনিকে চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে সেটিও এই ষড়যন্ত্রের অংশ বলেই দাবি অনেকের। ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকসহ বিভিন্ন জনের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে ২০১৪ সালে রনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর অধিকাংশ সময়ে রনি চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারগুলোর নানা অনিয়ম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হওয়ায় মহিউদ্দিনবিরোধী অংশও রনির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল সবসময়। এসব বিষয় রনির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য অনেকের।
শিক্ষাবিদ-সমাজবিজ্ঞানী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, ‘আমি যতটুকু দেখেছি তাতে মনে হয়েছে, রনি একজন আদর্শবাদী, মেধাবী ছাত্রনেতা। ছাত্র অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সচেষ্ট। মনে হচ্ছে নানা ষড়যন্ত্রের শিকার রনিকে ফাঁসানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘চট্টগ্রামের হাজারো ছাত্রের প্রাণস্পন্দন, ভদ্র, স্মার্ট ও মেধাবী ছাত্রনেতা রনি চট্টগ্রাম কলেজ, মহসীন কলেজ থেকে শিবির বিতাড়িত করার আন্দোলনে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেছিলেন। এ ছাড়া ছাত্রদের অধিকার আদায়ের নানা ইস্যুতেও সে দারুণভাবে কাজ করেছেন। কিন্তু বিতর্কিত কিছু কর্মকান্ড, যা করা ঠিক হয়নি মোটেই। রনি ভুলত্রুটি সংশোধন করে তার কাজের মধ্য দিয়ে আরো ভালো অবস্থানে আসতে পারে।’
রনির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা কে এই রাশেদ: কোচিং ব্যবসার অফিসকে পুঁজি করে অন্যান্য ব্যবসার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নেয়া ও ব্যবসার পার্টনার করার স্বপ্ন দেখানোই রাশেদ মিয়ার কাজ বলে জানা গেছে। এক সময় ব্যবসায় ক্ষতি দেখিয়ে দিনের পর দিন পাওনাদারকে হয়রানি করে থাকেন।
নগর ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া সম্পাদক কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা রনির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। রাশেদ মিয়া তার কোচিংয়ের একটি শাখা আগ্রাবাদে খোলার জন্য বেশ কিছু টাকাও চেয়েছিল আমার কাছে এই মর্মে যে, সে আমাকে কোচিং শাখাটির শেয়ার দেবেন। 
তিনি বলেন, নুরুল আজিম রনি তার পরিবার ও আত্মীয় থেকে ঋণে টাকা নিয়ে ৮ থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা দেন রাশেদকে এবং কোচিং ব্যবসার অর্ধেক অংশীদার হন। কিন্তু রনিকে হিসাব দিতেন না।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ-ছাত্রলীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বলেন, রাশেদ মিয়ার অনিয়ম দেখে রনি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু একটি বিষয় একের পর এক থাপ্পড় মেরে যাচ্ছে আর রাশেদ বসে বসে তা হজম করছেন!! ক্যামেরা আগে থেকেই সেট করা ছিল তাই তিনি চুপ করে মার খাচ্ছিলেন। একের পর এক থাপ্পড় খেয়েই যাচ্ছেন, কোনো চিৎকার করছেন না, প্রতিবাদ করছেন না, দৌড়ে চলে যাচ্ছেন না, অফিসের লোকজন উনাকে রক্ষা করতেও এগিয়ে আসছেন না। কেন আসছেন না? কারণ তার দরকার ছিল একটা ভিডিও ক্লিপ।
নুরুল আজিম রনির বক্তব্য: নুরুল আজিম রনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি নগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থী- অভিভাবকদের নিয়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করেছি। কোনোদিন কোনো প্রতিষ্ঠান আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলতে পারেনি। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, যত মামলাই হোক কিংবা আমাকে ঘায়েলের যত ষড়যন্ত্রই হোক, আমি এই চট্টগ্রাম শহরের লাখ লাখ বঞ্চিত অসহায় শিক্ষার্থীর পক্ষে কথা বলবই।’
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে
Share on Google Plus

About bengalismsnew

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

loading...